নাম :- আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই pdf।
আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই pdf লেখক :- সাদাত হোসেইন।
পৃষ্টা :- ৮০।
Size/সাইজ :- 3 MB.
আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই pdf গল্পের কিছু অংশ :-
লাবণীর বিয়ে ভেঙে গেছে।
বিয়ে পাত্র পক্ষ ভাঙেনি। ভেঙেছে লাবণী নিজে। বিয়ের কথা একভাবে পাকা হয়েই ছিল। পাত্রের নাম আজাদ।
সে দেখতে শুনতে ভালো। উচ্চ শিক্ষিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছে। আচার-আচরণ ভালো। সাভাবিক হিসেবে এই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার কথা না। বিয়ে সাভাবিক হিসেবে ভাঙেওনি।
ভেঙেছে অদ্ভুত হিসেবে। আজাদ লাবণীকে দেখতে এসে তুমি বলে সম্বোধন করেছে। এই তুমি বলার কারণে বিয়ে ভেঙে গেছে। বিষয়টা লাবণীর পছন্দ হয়নি। তার ধারণা, যে ছেলে পাত্রী দেখতে এসেই পাত্রী কে তুমি বলে সম্বোধন করে, সে বিয়ের দুই দিন পর থেকে তুই তোকারি শুরু করবে।কথায় কথায় গায়ে হাত তুলবে।আমার আর কোথাও যাওয়ার নেই pdf download…
লাবণী ছেলের মুখের উপর বলে দিয়েছে। আপনার ভদ্রতা জ্ঞানের অভাব আছে। যেই ছেলের ভদ্রতা জ্ঞানের অভাব আছে তাকে আমি বিয়ে করবো না। লাবণীর বাবা আজহার উদ্দিন অবশ্য এই তুমি সম্বোধন সংক্রান্ত সমস্যাটি মানতে পারছে না।
তার ধারণা এটা না বিয়ে করার বাহানা মাত্র। এর পেছনে অন্য ঘটনা আছে। সেই ঘটনা হচ্ছে লজিং মাস্টার বাদল। বাদলকে নিয়ে অবশ্য চিন্তার কিছু নেই। তিনি বাদলের ব্যাবস্থা শুরু করে দিয়েছেন। তবে লাবণী বিষয় টা নিয়ে খুব বিরক্ত। এবারেই প্রথম না।
এর আগেও দুবার লাবণী তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিয়ে ভেঙে দিয়েছে। আজহার উদ্দিন আছরের নামাজ পড়ে দোতলার টানা বারান্দার এপাশ থেকে ওপাশে ক্রমাগত পায়চারি করছেন৷ তার হাতে হাকিমপুরী জর্দা দিয়ে বানানো পান। তিনি আঙুলের ডগা থেকে চুন দিয়ে মুখে দিচ্ছেন কিন্তু হাতে ধরা পান মুখে দিতে ভুলে গেছেন।
‘আব্বা আমাকে ডেকেছেন? ‘
লাবণী বারান্দার দরজা দিয়ে ঢুকলো। তার পরনে টকটক লাল শাড়ি।
এই শাড়ি পরেই সে কিছুক্ষণ আগে পাত্রপক্ষের সামনে গিয়েছিল।
আজহার উদ্দিন লাবণীর প্রশ্নের জবাব দিলেন না। তিনি নানান বিষয় নিয়ে চিন্তিত। কিন্তু মানুষ দুনিয়াতে আসে ঝামেলা মাথায় নিয়ে। ইনিও তাদের একজন।
দুনিয়ার সকল ঝামেলা একসাথে মাথায় নিয়ে বসে আছেন। ঝামেলা মাথায় নিয়ে বেশীক্ষন বসে থাকা যায় না। মাথা থেকে নামতে হয়। এই নামানোর কাজটা কঠিন। কিন্তু আজহার উদ্দিন জানেন কাজটা কিভাবে সহজ করতে হয়।
‘তোমার ঘটনাটা আমাকে খুলে বলো’। আজহার উদ্দিন সরাসরি আলোচনায় চলে গেলেন। তার হাতে সময় অল্প।
‘কোনো ঘটনা নাই আব্বা’। বুঝলাম ঘটনা নাই। কিন্তু ছেলের আচরণ তোমার পছন্দ হয় নাই?
লাবণী এ কথার কোনো উত্তর দিলো না। সে দরজার চৌকাঠের সাথে হেলান দিয়ে দাড়ালো।
‘এখন ই আচরণ পছন্দ হওয়ার কিছু নেই। সে এখনো জানে না তোমার পছন্দ-অপছন্দ কি। তুমিও তার পছন্দ-অপছন্দ জানো না।
এটার জন্য সময় দরকার। দুজনের বোঝাপড়া দরকার। সে অতি উচ্চ শিক্ষিত ছেলে। বংশ মর্যাদা ভালো ।
আমার ধারণা তুমি একটু সময় দিলেই বোঝাবুঝির বিষয় টা ক্লিয়ার হয়ে যেত। তুমি তাকে যে কথা বলছ তাতে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার কথা, কিন্তু বিয়ে এখনো ভাঙে নাই। না ভাঙার কারণ তোমাকে ছেলের অসম্ভব পছন্দ হয়েছে। সে তোমার সাথে আরেকবার কথা বলতে চায়।
‘এই ছেলেকে আমার পছন্দ না আব্বাা ‘।
‘কেন পছন্দ না? সবকিছুর পিছনে একটা কারণ থাকে। আমাকে তুমি একটা কারণ দেখাও যে এই কারণে ছেলেটা তোমার পছন্দ না’।
লাবণী এই প্রশ্নের ও কোনো জবাব দিলো না। সে চুপ করে রইলো। নিচে রাম্নাঘরের সাম্নে মধু মিয়া শামিয়ানা টানাচ্চে। সন্ধায় বাড়িতে মেহমান আসার কথা। নতুন পুলিশ সুপার এসেছে থানায়। তার জন্য সামান্য খানা পিনার আয়োজন। পছন্দ-অপছন্দ ইচ্ছার ব্যাপার। ছেলের সম্পর্কে আমি খোজ খবর নিয়েই বিয়ে………