স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় নিজের হাত খরচ জোগানোর জন্য পার্ট টাইম জব বেশ ভালো একটি অপশন। ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে ছেলেমেয়েরা টিনেজ বার্ডস থেকে সামার স বার্ডস ইন্টারনেটশিপ সহ বিভিন্ন ভাবে ইনকাম শুরু করে দেয়। আর সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও ধীরে ধীরে স্টুডেন্টদের মধ্যে পার্ট টাইম জব এর মাধ্যমে আয়ের প্রবণতা ও কিন্তু বাড়ছে। পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম জব এর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর নিজের হাত খরচের পাশাপাশি, পড়াশোনার খরচ চালানো থেকে শুরু করে ফ্যামিলি কেউ সাপোর্ট করতে পারে।
এছাড়াও পার্টটাইম জব থেকে একজন স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিনট, টাইম ম্যানেজমেন্ট টিমওয়ার্ক সহ বিভিন্ন ধরনের স্কিল ও নলেজ গেদার পারে। এ ধরনের স্কিল ও নলেজ ফিউচার এ ওয়ার্ক ফিল্ডে একজন স্টুডেন্টের জন্য জন্য বেশ সহায়ক হতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে কাজের সময়ও অভিজ্ঞতা খুঁজলে এখানে অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ বেশ কম। স্টুডেন্ট ছাড়াও যারা নিজেদের ইনকাম স্কিল নোলেজ এবং এক্সপেরিয়েন্স বাড়ানোর সুযোগ খুঁজছে , তাদের জন্য পার্ট টাইম জব বেশ সহায়ক হবে।
আর তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই আর্টিকেলে জানানো হবে, এমন পাঁচটি সেক্টর এর কথা যেখানে part time জবের মাধ্যমে ইনকামের পাশাপাশি অভিজ্ঞতা অর্জনে ও স্কিল development এর সুযোগ রয়েছে।
১. টিউশনি করানো:
প্রাতিষ্ঠানিক কোন জব না হলেও ছাত্রজীবনে আয়ের এর উৎস হিসেবে টিউশন প্রোভাইডিং সবচেয়ে পুরনো ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে একটি। টিউশন প্রোভাইডিং এর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর ইনকাম এর পাশাপাশি জ্ঞানের পরিধি ও বৃদ্ধি পায়। যা পরবর্তীতে বিসিএসও ব্যাংকে চাকরির পরীক্ষা থেকে শুরু করে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় ভালো করতে সহযোগিতা করবে।
শিক্ষার্থীরাও ছাড়াও যারা পার্টটাইম জব হচ্ছে তাদের জন্য টিউশনি করানো একটি ভালো option হতে পারে। প্রফেশন হিসেবে শিক্ষকতা সবসময় বেশে সম্মানজনক এবং কেউ যদি এই প্রফেশনটা ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চায়, সে ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পাশাপাশি বিভিন্ন কোচিং সেন্টার ও কাজের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের এই ইন্ডাস্ট্রিতে–
টেন মিনিট স্কুল ,শিখো, বহুব্রীহি সহ বেশ কয়েকটি স্ট্যাটাফ সাফল্যের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এদের মধ্যে অনেকেই লোকাল ও ইন্টারনেসনাল ফান্ডিং ও পেয়েছে।
যা এই ইন্ডাস্ট্রির বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। টিউশন প্রোভাইডিং করার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে, একজন শিক্ষার্থী বাংলাদেশের অন্যতম এই গ্রয়িং সেক্টরে নিজের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। অন্যদিকে পার্টটাইম হিসাবে প্রাইভেট টিউশনি প্রোভাইডিং ছাড়াও এই সমস্ত প্ল্যাটফর্ম গুলোর পাশাপাশি অনলাইনেও স্মার্টলি টিউশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ও অনেক সুযোগ রয়েছে।
২. রেস্টুরেন্ট ইন্ডাস্ট্রি:
বাংলাদেশের অন্যতম গ্রয়িং ইন্ডাস্ট্রি গুলোর মধ্যে মধ্যে একটি হচ্ছে দেশের রেস্টুরেন্ট ও ফাস্টফুড ইন্ডাস্ট্রি। ইউরপ আমেরিকাতে হাই স্কুল এবং কলেজ শিক্ষার্থীদের অন্যতম আয়ের উৎস হচ্ছে রেস্টুরেন্টে পার্ট টাইম জব। ইন্সেক্ট স্টুডেন্ট ছাড়াও অনেকেই এই ইন্ডাস্ট্রিতে পার্টটাইম কাজ করছে। এমনকি ইউরোপ আমেরিকার অনেক রেস্টুরেন্টে ই বাংলাদেশী প্রবাসীরা কাজ করে থাকে।
এক ইউএস এর ওয়েবসাইটের তথ্য মতে আমেরিকাতে ২ মিলিয়নেরও বেশি কর্মরত আছে এই সেক্টরে। বিশ্বের অনেক বড় বড় কোম্পানির সিইও রা তাদের প্রথম চাকরি হিসেবে রেস্টুরেন্ট ইন্ডাস্ট্রির কথা বলে থাকেন। বাংলাদেশ ও এই ইন্ডাস্ট্রির গ্রোথ এবং ইন্টারন্যাশনাল রেস্টুরেন্ট চেন এর কার্যক্রম বাড়ার সাথে সাথে প্রচুর শিক্ষার্থী রেস্টুরেন্ট গুলোতে টাইম কাজ করছে। রেস্টুরেন্ট ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের সুবাদ এ প্রাপ্ত জ্ঞান থেকে একজন শিক্ষার্থী কাস্টমের রেলেশন, কাস্টমার ম্যানেজমেন্ট , কাস্টমার সার্ভিস, এসব বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।
যা পরবর্তীতে এই সেক্টরে হোটেল এন্ড হসপিটালে ক্যারিয়ার গড়তে বেশ সহায়ক হতে পারে। যার ফলেও স্টুডেন্ট ছাড়া পার্ট টাইম জবের অপরচুনিটি খুঁজে থাকে তাদের জন্য রেস্টুরেন্ট ইন্ডাস্ট্রি বেশ বেশ ভালো একটি অপশন হতে পারে। এছাড়াও রেস্টুরেন্টে পার্টটাইম জবের মাধ্যমে এই ব্যবসার সকল খুঁটিনাটি সম্পর্কে, অভিজ্ঞতা অর্জন করে সেই অভিজ্ঞতা আপনাকে কাজে লাগিয়ে নিজেই একটা রেস্টুরেন্ট প্রতিষ্ঠিত করার মত কনফিডেন্স আপনি গেদার করতে পারেন।
৩. রাইট শেয়ারিং:
বর্তমানে বিশ্বের ফার্স্ট এন্ড একটিভ সেক্টর হচ্ছে রাইট শেয়ারিং। বাংলাদেশে পাঠাও এর মাধ্যমে রাইট শেয়ারিং এর যাত্রা শুরু হওয়ার পর উবার এর মতো প্রতিষ্ঠান রা এসে এই রাইট শেয়ারিং সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে। এই সমস্ত প্ল্যাটফর্ম গুলো ব্যবহার করে যে কেউই খুব সহজেই, নিজের ফ্রি সময়টাতে চাইলেই ইনকাম করতে পারে।
যদিও রাইট শেয়ারিং নিয়ে পূর্বে আমাদের দেশে কিছুটা সমস্যা থাকলেও ধীরে ধীরে বিষয়টি কমে আসছে। কেননা ইউরোপ আমেরিকাতে রাইট শেয়ারিং এর মাধ্যমে ইনকাম করার ক্ষেত্রে সাব কন্টিনেন্ট এর মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এবং মানুষ অহরহই নিজেদের গন্তব্যের পথে যাওয়ার পথে রাইট শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ইনকাম করে যাচ্ছেন।
part time রাইট শেয়ারিং এর মাধ্যমে স্টুডেন্টরা ছাড়াও যে কেউ খুব অল্প সময়ের মধ্যে বেশ ভালো একটি ইনকাম জেনারেট করতে পারবে।
৪. ডেলিভারি সার্ভিস:
ই–কমার্স এর ওপর নির্ভরযোগ্যতা বাড়ার পাশাপাশি ডেলিভারি সার্ভিসের চাহিদা ও প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। রেস্টুরেন্ট ইন্ডাস্ট্রিস গ্রোথের অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে অনলাইন ফুড অর্ডারিং প্ল্যাটফর্ম। মানুষ প্রতিনিয়তই অনলাইনে খাবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনেক কিছুই কেনাকাটা করছেন। আর এসব পণ্য মানুষের দৈর্ঘ্য রায় পৌঁছে দিতে কাজ করছে, ডেলিভারি সার্ভিস প্রোভাইডাররা।
বিশ্বজুড়ে কুরিয়ার এবং লোকাল ডেলিভারি সার্ভিস গুলো অনেক বড় একটি ইন্ডাস্ট্রি। বড় বড় কুরিয়ার কোম্পানিগুলো লাস্ট মাল ডেলিভারি মূলত যারা পার্টটাইম জব করে তারাই করে থাকেন। আই মিস ওয়ার্ল্ড এর একটি তথ্য মতে usa এর এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ কর্মরত আছে এই ইন্ডাস্ট্রিতে।
অন্যদিকে বাংলাদেশেও এক লাখেরও বেশি মানুষ এই ডেলিভারি সেক্টরে জড়িত। স্টুডেন্ট এবং পার্টটাইম জবের অপরচুনিটি খোঁজা মানুষের জন্য। ফ্রী সময় কুরিয়ার সার্ভিস এবং ফুড অর্ডারিং প্ল্যাটফর্ম গুলোর জন্য ডেলিভারি বেশ ভালো একটি ইনকামের সোর্স। ডেলিভারি ইন্ড্রাস্টিতে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে একজন শিক্ষার্থী পরবর্তীতে একজন লজিস্টিক সেক্টরে কাজের জন্য প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।
৫. ফ্রিল্যান্সিং:
প্রফেশন হিসেবে বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সিংয়ের জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। অনেকেই তাদের বোরিং ডেস্ক জব ছেড়ে ধীরে ধীরে ফ্রিল্যান্সিং এর দিকে ঝুকছে।
ডাটা এন্ট্রি, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইনিং, ভিডিও এডিটিং, অ্যানিমেশন প্রোগ্রামের যদি কারো দক্ষতা থাকে তাহলে সে খুব সহজেই তার ফ্রি সময় এ বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে তার স্কিলকে কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ও ইনকাম করতে পারে।
মার্কেটপ্লেসে কাজের অভিজ্ঞতাতে ভবিষ্যতে একজন স্টুডেন্ট স্কিল ওয়ার্কার হিসেবে বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কাজের পাশাপাশি। রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিতে ও কাজের সুবর্ণ সুযোগ।
সর্বশেষ কথা:
তো পাঠক: আমি চেষ্টা করেছি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে এটি জানানোর। যে আপনি স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় নিজের ফ্রী সময়কে কাজে লাগিয়ে কিভাবে টাকা ইনকাম করতে পারেন সেই ব্যাপারে।
আর এই পাঁচটি জবের মধ্যে আপনার কোন জবটি সবচাইতে ভালো লেগেছে সেটি কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। আর আপনি যদি প্রতিনিয়ত জব রিলেটেড পোস্ট করতে খুবই পছন্দ করেন তাহলে আমাদের সাইটটি বুক মার্ক করে রাখতে পারেন।
খুব শিগগিরই দেখা হবে পরবর্তী কোনো জব রিলেটেড পোস্টে ততক্ষণ পর্যন্ত নিজের খেয়াল রাখুন। এবং পোস্টটি ছড়িয়ে দিন আপনার বন্ধুদের কাছে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ।