নাম:- Ebong inquisition pdf download by Avik Sarkar / এবং ইনকুইজিশন pdf download
লেখক:- Avik Sarkar / অভীক সরকার।
এবং ইনকুইজিশন বইয়ের pdf সাইজ:- 164MB
Ebong inquisition →পাঠক রিভিউ(১):-
তারানাথ তান্ত্রিকের সাথে পরিচয় আমার সেই কৈশোর বয়সে,ভয়ে কাটা হয়ে যেতাম কিন্তু তাও পড়ার লোভ সামলানো বড় দুষ্কর.এরপর এ বছরের শুরুতেই হাতে পেলাম “সেই অজানার খোঁজে”অবধূত কালীকিংকর মশাই আমাকে তারানাথের মতই তার গল্পে বুঁদ করে রেখেছিলেন.
তন্ত্র মন্ত্র শব্দটা শুনলেই মনে হয় সবকিছু হিন্দু ধর্ম সম্পর্কিত, এবং বললে বোধহয় ভুল হবে না আমাদের অধিকাংশ সাধারণ মানুষের ধারনাই এটা তান্ত্রিক তন্ত্রসাধনা এগুলো সব সেই অনাদিকাল থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই চর্চা হয় শুধু,তাই এসব নিয়ে বিশেষ ঘাঁটাঘাঁটি করে কেউ বিপাকে পড়তে চায়না এই ভয়াবহ পরিণতির কথা চিন্তা করে.
কিন্তু তন্ত্রের এই মন্ত্রের উৎপত্তি যে বৌদ্ধধর্ম থেকে তা আমার অজানাই থাকতো যদি অভীক সরকারের এই এবং ইনকুইজিশন বইখানা পড়া না হত.
প্রতিটি গল্পই এত সুন্দর এবং ইউনিক যে আমি বাধ্য হয়েছি অন্য সব বই বাদ দিয়ে এতেই মগ্ন হয়ে থাকতে.
তবে আমার নিজের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে আছে “ভোগ” গল্পটি, রাতের বেলা পড়ার সময় ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছিলাম দিনের বেলায় ও মাঝেমধ্যে যে গায়ে কাঁটা দেয়নি তা বললে নির্জলা মিথ্যাচার হবে আর কি 😐
এবং শেষ গল্পটি কথায় বলে না ওস্তাদের মার শেষ রাতে এই কাহিনীটি ঠিক তেমন, অতীত আর বর্তমানের মেলবন্ধন বাকিগুলোতে থাকলেও ১৫০০ শতকের সেই সময়ের সাথে বর্তমানের সম্পর্ক যে বিনিসুতোয় বাধা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে তারিফযোগ্য
তবে পুরো এবং ইনকুইজিশন বইয়ে একটি চরিত্র পাবেন সব জায়গায় এবং তার সেই একটি আপ্তবাক্য”ভালোবাসা থেকে বড় ম্যাজিক আর নেই”একথা শুনে কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের প্রতি আপনার মুগ্ধতা কাজ করবে না এই কথা বলা বড় শক্ত
একটি চোখবুঁজে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে দেওয়া পাঁচ তারা এবং ইনকুইজিশন বইটি আপনাকে অতীত বর্তমানের রোলার কোস্টার অভিযানের সাথে হাসি কান্না ভয় সহ আরো নানা অনুভূতি দিবে অনায়াসে,সময় থাকলে পড়ে ফেলুন
এবং ইনকুইজিশন pdf বই রেটিং :🌠🌠🌠🌠🌠 এর বেশি দেওয়ার সুযোগ থাকলে একটু ও কিপটেমি করতাম না 😍
Ebong inquisition / এবং ইনকুইজিশন pdf পাঠক রিভিউ(২):-
অভীক সরকারের লেখা এই প্রথম পড়লাম। অনেক পড়াশোনা করেই তিনি গল্পগুলো লিখেছেন। এবং ইনকুইজিশন গল্পের পটভূমি বিচিত্র ও বিস্তৃত। কল্পনার চরিত্রগুলোর সাথে অভীক সরকার মিলিয়ে দিয়েছেন বাস্তবের মানুষদেরও।
কখনো ঠগী উৎখাতকারী হেনরী স্লিম্যান, কখনো সোমপুর বিহারের প্রাচীন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এসেছেন গল্পের চরিত্র হয়ে।
গল্পের পটভূমি কখনো মধ্যভারত, কখনো পর্তুগাল, কখনো গোয়া, কখনো আফগানিস্তান, মুম্বাই অথবা শহর কলকাতা সময়কাল কখনো পাল আমল, কখনো মধ্যযুগ, কখনো উনিশ আবার কখনো বর্তমান একবিংশ শতাব্দী।
তবে একটি চরিত্র ফিরে ফিরে এসেছেন প্রতিটি গল্পে, ইনিও এক ঐতিহাসিক চরিত্র, নবদ্বীপের বিখ্যাত তন্ত্রসাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ। সপ্তদশ শতকের এই সাধককে অভীক সরকার ফিরিয়ে এনেছেন তার গল্পে। এবং ইনকুইজিশন pdf গল্পের মূল নায়ক তিনি হয়তো নন, তবে গল্পের নিয়ন্তা তিনিই। স্বল্প উপস্থিতি দিয়ে তিনিই কাহিনীর গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
অভীক সরকার তন্ত্র শক্তির ভয়াল দিক যেমন দেখিয়েছেন, তেমনি এর শুভ শক্তির দিকটির জয়ও দেখিয়েছেন। তিব্বত আর ভারতে চর্চিত তন্ত্রের সাথে মিলিয়ে দিয়েছেন ইউরোপে প্রচলিত ব্ল্যাক ম্যাজিককেও।
শুভ শক্তির দেব দেবীকে যেমন দেখিয়েছেন তেমনি এনেছেন স্বাক্ষাৎ শয়তানকেও। হিন্দু, বৌদ্ধ তন্ত্র আর এই দুই ধর্মের দেব দেবীদের যোগসূত্রও কিঞ্চিৎ ধরিয়ে দিয়েছেন। তবু দু’একটি সাধারণ দূর্বলতা না বলে পারছিনা।
পর্তুগীজ বালক তিয়াগো তার দাদুর কাছে ইংরেজী ভাষায় হি হ্যাজ কাম বলবে কেন। মিগুয়েল এর ডায়েরীর সব কথা সাধু ভাষায় লেখার কোন দরকার ছিল কি? এরকম সামান্য কিছু ত্রুটির বাইরে সবমিলিয়ে ভালো লেগেছে।
যদিও ভয় সৃষ্টি বা শুভ অশুভের লড়াই পড়ার চেয়ে আরও স্নিগ্ধ সুন্দর কিছু পড়তে বেশি ভালো লাগে আমার, তারানাথ তান্ত্রিকের গল্পে যেমন ভয়ের সাথে সাথে একটা মায়া জড়ানো থাকে অভীক সরকারের গল্পে সেটা মিসিং। আগামীতে লেখক তেমন গল্পও হয়তো লিখবেন, এটাই প্রত্যাশা।
এবং ইনকুইজিশন pdf বই পাঠক রিভিউ (৩):-
পর্তুগালের বিখ্যাত ভাজ পরিবারের উপর রয়েছে প্রায় পাঁচ শ’ত বছরের পুরোনো একটা অভিশাপ। স্বয়ং বেতালের দেয়া অভিশাপে ওই অভিজাত পরিবারটির জৈষ্ঠ্য সন্তান খুব বেশি দিন বাঁচে না।
মোটামুটি একটা পরিত্রাণের উপায় পেয়ে মৃত্যুশয্যায় একমাত্র পুত্র থিয়াগোকে রেখে অভিশাপ থেকে মুক্তির আশায় রহস্যময় এক তান্ত্রিক পুরুষ কৃষ্ণানন্দ আমবাগীশ আর ইউরোপের ইস্পাত নামে খ্যাত কর্ণেল ভাজ গোয়ার আমোনা গ্রামে রুদ্র বেতাল মন্দিরের সামনে শুরু করে সাধনা। সে কি আর যে সে সাধনা! বেতালকে আহ্বান করা কি মুখের কথা?
বেতাল! সাক্ষাৎ যমদূত। সে এলে আহ্বানকারীর প্রাণ সংহার না করে তুষ্ট হয় না। তাই সাধনার পূর্বে আহ্বান করা হয়েছে দেবী কালভৈরবীকে। দেবীকে তুষ্ট করে তবেই আহ্বান জানানো হবে বেতালকে। শুরু হলো আহ্বানক্রিয়া।
চারপাশে ঘোরাফেরা করছে অতৃপ্ত আত্মারা, পৃথিবী যেন আর সেই চিরচেনা পৃথিবী নয়। পাতালের নরক থেকে উঠে আসা প্রেতরা চেষ্টা করছে মায়ায় ফেলে পূজা ধ্বংস করে দিতে.. এ হেন টানটান উত্তেজনার মুহূর্তে আমি মর্কট (ভয়ের চোটেই কি না কে জানে) কঠিন ঘুমে 🐸 পরদিন ঝাঁ চকচকে আলোর উপস্থিতিতে পড়লাম বেতাল পর্ব। কী হলো?
ভাজ পরিবার কি সেই অভিশাপ কাটিয়ে উঠতে পারলো?
পৃথিবীজোড়া বিখ্যাত ‘ইউরোপের ইস্পাত’ নামে খ্যাত মার্টিনেজ ভাজ কি পুত্রের জন্য বেতালের কাছে আহুতি দিলেন?
কোথায় ভারতবর্ষ আর কোথায় পর্তুগাল। রুদ্র বেতাল কেনই বা এতো ক্ষেপা হয়ে গেলেন যে দেশ-কাল-পাত্র ভেদে বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ একটা পরিবারকে অভিশপ্ত জীবন কাটাতে হচ্ছে সেটা জানার জন্য পড়তে হবে অভীক সরকারের এবং ইনকুইজিশন pdf বইটি।
ইদানিং তন্ত্র-মন্ত্র, ইতিহাস, মিথ ইত্যাদি ইত্যাদি নিয়ে প্রচুর বই লেখা হচ্ছে। একটা জিনিস যেটা সবচেয়ে বিরক্তিকর, সেটা হলো এ ধরণের বইগুলোর প্রায় প্রত্যেকটাতেই একটা ‘অতি পন্ডিত’ ক্যারেক্টার থাকে। ইনারা আবার মহাজ্ঞানী প্রজাতির।
জগতের হেন বিষয় নেই যা ইনারা জানেন না। শুধু নিজ বিষয় না, অন্য সব বিষয়ে সমান জ্ঞান রাখেন এবং প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে গড় গড় করে উইক্কির মতো সন তারিখ মুখস্ত বলে রহস্য উদ্ধার করে কেসের সানডে মানডে ক্লোজ করে দেন।
অভীক সরকারের এবং ইনকুইজিশন বইটা তন্ত্র-মন্ত্র নিয়ে লেখা হলেও ওই দোষ হতে যথেষ্ট পরিমাণে মুক্ত। যতোটুকু না জানাইলে না, কিংবা যার মুখে ঠিক যতোটুকু মানায় ততটুকুই চরিত্রগুলোর ইতিহাসের ফড়ফড়ানি দিয়েছেন। এবং এই পরিমিতিবোধটাই সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে।
টোটাল চারটা গল্প আছে এবং ইনকুইজিশন বইয়ে। ভোগ গল্পটা পড়েছিলাম আগেই। এবং তখন যেমন উপভোগ করেছিলাম, গতরাতে তৃতীয় বারের মতো পড়তে যেয়ে সেই সমান ভয় পাওয়া, সেই একই রকম গায়ে কাঁটা দেওয়া-মোটমাট প্রচন্ড ভয়ের হলেও আমার পড়া পছন্দের গল্পগুলোর মাঝে একদম প্রথম দিকেই থাকবে ভোগ।
এবং ইনকুইজিশন বইয়ের ভোগের চেয়ে আরও বেশি গায়ে কাঁটা দেয় সানডে সাসপেন্সের ভোগে। ভাই গো ভাই! কদ্দিন যে থেকে থেকে চমকে উঠেছি ডামরির কণ্ঠ মনে করে! :/
প্রথম গল্প শোধ মোটামুটি রকমের। শুরুটা দুর্দান্ত ভাবে হলেও ইন্ডিংটা নিয়ে আরেকটু কাজ করা যেতো কিছুটা অতৃপ্তি রয়ে গেছে। (অন্তত আমার কাছে) বইয়ের দ্বিতীয় গল্প ‘রক্তফলক’। এটা নিয়েও সেইম কম্পলেইন। কিন্তু ওটাও বেশ উপভোগ্য।
রেটিঙের হিসাবে আসলে এবং ইনকুইজিশন আর ভোগের জন্য বইটা পুরোপুরি পাঁচ তারকা তো বটেই তার চেয়ে বেশি তারকা আশা করে। বহুদিন বাদে তন্ত্র মন্ত্র নিয়ে বেশ উপভোগ্য একটা বই পড়লাম। আর শোধ আর রক্তফলকের জন্য তারকা কিছুটা কম। 🐸 যাই হোক, আমি অভাজন পাঠক। প্রচন্ড ভয়ের সাথে বিমলানন্দ পেয়েছি, এই বা কম কি। লেখকের শুভ হোক।