নাম:- onko vaiya pdf download / অঙ্ক ভাইয়া pdf download
লেখক:- চমক হাসান।
প্রকাশনী:- আদর্শ প্রকাশনী।
onko vaiya pdf / অঙ্ক ভাইয়া pdf সাইজ:- 5MB
অঙ্ক ভাইয়া বইয়ের প্রথম কিছু অংশ:-
অধ্যায় ১ √ অঙ্ক ভাইয়া ভয়ের ভাবনাই ভয়ংকর ১.১
ছায়ামূর্তির মতাে হেঁটে আসছিলেন মানুষটি, ধীরে ধীরে, তিনতলার করিডর ধরে। হাতে দুটো বই, একটা চকের বাক্স, একটা ডাস্টার, আর কালাে রঙের একটা পাকানাে বেত। একেকটা ক্লাসরুমের সামনে দিয়ে হেঁটে আসেন আর ক্লাসরুমগুলাের স্বাভাবিক হইচই হঠাৎ থেমে যায়, কবরস্থানের মতাে সুনসান নীরব হয়ে যায়।
মাঝে মাঝে দুয়েকজন ছাত্রের ভয় পাওয়া গলার ফিসফিস আওয়াজ শােনা যায়, চুপ থাক সবাই, নজিবুল্লাহ স্যার যায়।’ শুনে নজিবুল্লাহ সাহেবের চেহারায় কোনাে ভাবান্তর হয় না, তিনি নীরবে হেঁটে যান! হেঁটে হেঁটে করিডরের শেষ মাথায় দশম শ্রেণি ‘খ’ শাখার ক্লাসে গিয়ে ঢােকেন।
ঢুকেই দরজাটা ঠাস করে বন্ধ করে দেন। টেবিলে বই, চক-ডাস্টার রাখেন, তারপর বেতটা হাতে নিয়ে টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। ক্লাসের দিকে ঠান্ডা দৃষ্টিতে তাকান। মেয়েরা বসেছে বাম দিকের বেঞ্চগুলােতে, ছেলেরা ডান দিকে ।
সবাই জানে, আজ কোনাে একটা মেয়ের কপালে দুঃখ আছে। স্যার সবার সম-অধিকারে বিশ্বাসী। গতকাল স্যারের প্রচণ্ড ঝাড়ি খেয়ে প্রায় সংজ্ঞা হারিয়েছিল একটা ছেলে। ছেলেটার বিশেষ দোষ ছিল না। স্যার পড়াচ্ছিলেন পিথাগােরাসের উপপাদ্য।
সে মুখ ফসকে জিজ্ঞেস করে ফেলেছিল, স্যার, এটা কোথায় কাজে লাগে। আর যায় কোথায় সে নিজেকে কী মনে করে, কোন সাহসে সে পড়ালেখা বাদ দিয়ে অদরকারি প্রশ্ন করে, সে আগের ক্লাসের কিছু বােঝে কি না, এসব বলার পর আরও স্পষ্ট করে স্যার তাকে বুঝিয়ে দিলেন, ছাত্রদের কাজ প্রশ্ন করা, প্রশ্ন করবে স্যারেরা, আর ছাত্ররা লিখবে উত্তর! সে যা-ই হােক, গতকাল যেহেতু একটা ছেলেকে ঝাড়ি দিয়েছেন, সবাই প্রায় নিশ্চিত যে আজকে ঝাড়ি দেবেন কোনাে একটা মেয়েকে।
স্যারের নীতি এবং সমতাবােধে কোনাে ভুল নাই । নজিবুল্লাহ স্যার মেয়েদের সবার দিকে একবার নজর বুলিয়ে লটারির মতাে করে একজনকে বেছে নিলেন, ঠান্ডা-গম্ভীর গলায় হাঁক দিলেন অ্যা-ই, তুই দাড়া। যাকে বললেন, সে দাঁড়াল না।
তার পেছনের দুই সারির দুজন ভয় পেয়ে দাড়িয়ে গেল । কিঞ্চিত বিরক্ত হয়ে স্যার বললেন— তােরা বস, এই যে লাল ব্যাগ, তুই দাড়া। কী হলাে, কথা কানে যায় না? টিনা আশপাশে তাকিয়ে দেখে শুধু তার ব্যাগটাই লাল।
তার আশঙ্কাই সত্যি, আজ তার পালা। আর যদি জীবনে লাল ব্যাগ কিনেছি! ভাবতে ভাবতে আর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সে উঠে দাঁড়াল…।
সরে, টিনা যখন জর্জরিত নজিবুল্লাহ স্যারের প্রশ্নবাণে মনে করতে পারছে ছােট ক্লাসের জিনিসপত্রও; টিনা যখন ভেঙে পড়ছে স্যারের অকথ্য তিরস্কারে, প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন ভুলে নিজেকে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে আদর্শ একজন কাজের বুয়া হিসেবে; টিনা যখন ফরিয়াদ করছে ও আল্লাহ গাে, তুমি এই পৃথিবীতে অঙ্কের মতাে ভয়াবহ ব্যাপারটা কেন দিলা, কী দরকার ছিল, আর দিলা তাে দিলা নজিবুল্লাহ স্যারকেই দিলা, কেন আল্লাহ, হােয়াই…?
ঠিক তখন, ২ কিলােমিটার দূরে গণিতের প্রেমে মুগ্ধ হয়ে উদাস ভঙ্গিতে হাঁটছিল ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের হ্যাংলাপাতলা একটা ছেলে।
সূর্য প্রায় মাথার ওপর, ছেলেটার ছােট্ট একটা ছায়া পড়ছে মাটিতে সেই প্রায়-দেখাই-যায়-না-এমন ছায়ার।দিকে তাকিয়ে সে ভাবছিল, গণিত আমাদের কী অবিশ্বাস্য সব ক্ষমতা দিয়েছে। সূর্য মাথার ওপর থাকলে ঠিকভাবে ছায়া পড়ে না, শুধু এইটুকু ব্যাপারের ওপর ভিত্তি করে এখন থেকে আড়াই বছর আগে গােটা পৃথিবীর ব্যাসার্ধ প্রায় নিখুঁতভাবে ভয়ের ভাবনাই ভয়ংকর মেপে ফেলেছিলেন ইরাটোস্থিনিস।
ছেলেটা আকাশের দিকে তাকায়, দেখে একটু করে মেঘ জড় হচ্ছে। রাতে বৃষ্টি হবে— এটাই আবহাওয়ার পূর্বাভাস। পূর্বাভাসে বলে দেওয়া আছে রাত ১২টায় শতকরা ৮০ ভাগ সম্ভাবনা আছে বৃষ্টি হওয়ার!
তাপমাত্রা, আদ্রর্তা, চাপ, বাতাসের গতিবেগ, গতিপথ মেপে গণিত জানিয়ে দিচ্ছে কখন বৃষ্টি হবে! কী দারুণ। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে এসব পরিমাপের যন্ত্রপাতি যত নিখুঁত হচ্ছে, কম্পিউটারের হিসাবক্ষমতা যত বাড়ছে, যত বেশি তথ্য বিশ্লেষণ করা যাচ্ছে, তত বেশি নিখুঁত হয়ে উঠছে এই মডেলগুলাে।
ছেলেটা রাস্তার দিকে তাকায়, পিচের রাস্তাটায় কী কী জিনিস কী অনুপাতে থাকবে, তার নিখুঁত হিসাব আছে। কী ওজনের গাড়ি কতগুলাে চললে কত বছর রাস্তা ভালাে থাকবে তার হিসাব আছে। সে যানবাহনগুলাের দিকে তাকায়, ছােট ছােট যন্ত্রগুলাে কীভাবে বসালে, গাড়ি কীভাবে চলবে তার জটিল গণিত আছে।
হাতের মােবাইল ফোনটার দিকে তাকায় সে, ছােটখাটো একটা কম্পিউটার এটা। সারা পৃথিবীর সাথে যােগাযােগ করছে এইটুকু যন্ত্র ।
এখানে বসে সে জেনে ফেলতে পারে, পৃথিবীর আরেক কোনায় কী ঘটছে এই মুহূর্তে। এর পেছনে সবচেয়ে বড় শক্তিগুলাের একটি হলাে গণিত। ও ভাবে আর মুগ্ধ হয়।
গাণিতিক ধারণাগুলাে ব্যবহার করে মানুষ কত সহজে আপাত-অসাধ্য সব কাজ করে ফেলছে! ছেলেটা, যার নাম তূর্য, অস্থির হয়ে ভাবে, ইশ, যদি সবাইকে বােঝাতে পারতাম, গণিতের ধারণাগুলাে কী অসাধারণ রকম সুন্দর!
শুধু কী কাজে লাগে বলেই গণিত সুন্দর? তূর্য জানে, বিষয়টা মােটেই অমন না। শুধু কী কাজে লাগে বলেই।বিশুদ্ধ গণিতের অনেক শাখা আছে, যেগুলাে কোনাে কাজে লাগানাের জন্য তৈরি হয়নি। সেগুলাে যেন শিল্পের গণিত সুন্দর
অঙ্ক ভাইয়া অধ্যায় ২ ✔প্রশ্ন চলুক নির্ভয়ে
প্রথম দিন পড়তে এসেই ভূর্যের ভক্ত হয়ে গেল ওরা চারজন। তূর্য সারাটা সন্ধ্যা গল্প করেই কাটাল। কী করে গণিত অলিম্পিয়াডে যুক্ত হলাে, কোথায় কীভাবে যায়, কী করে সেসব গল্প শােনাল। এরপর ও বলল, গণিত কী অসাধারণ ক্ষমতা দেয় মানুষকে ভবিষ্যৎ দেখার।
ও যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে এমন একটা ভঙ্গিতে বলল, ‘২০৩২ সালের ১৮ অক্টোবর রাত একটা দুই মিনিটে বাংলাদেশের আকাশে তাকালে দেখবে একটা পূর্ণিমা চাঁদ লাল টকটকে হয়ে যাবে।’ শুনে অবাক হয়ে গেল সবাই। তুর্য গণিত নিয়ে অবলীলায় কথা বলে যায় আর ওরা মুগ্ধ হয়ে শােনে। বাসায় ফেরার পথে ওরা ভূর্যের একটা নামও দিয়ে দিল— অঙ্ক ভাইয়া !
অঙ্ক ভাইয়া ওদের শােনাল সিমুলেশন বা অণুক্রিয়া বলে একটা ব্যাপার আছে, যেটা নাকি প্রকৌশলের প্রায় সব জায়গায় ব্যবহার হয়। একটা যন্ত্র বানানাের আগেই কম্পিউটারে হিসাব করে বলে দেয় যন্ত্রটা কেমন আচরণ করবে।
দালানকোঠা বানানাের আগেই হিসাব করে দেয় সে ভার নিতে পারবে কি না। এগুলাে তাে ভবিষ্যৎ দেখার মতােই একটা ব্যাপার, তাই না! তূর্য গণিতবিদদের নিয়ে মজার গল্প শােনায় ওদের।
এসব শুনে ওদের একটু একটু সন্দেহ হতে থাকে, গণিত ব্যাপারটা মনে হয় অনেক আনন্দের! শুধু কেউ কখনাে আনন্দটার কথা বলেনি বলেই ওদের যত ভয়।
তবে ওরা সবচেয়ে বেশি খুশি হলাে যখন ভাইয়া দুই হাত প্রসারিত করে একগাল হাসি দিয়ে বলল, “তােমরা আমাকে গণিত নিয়ে ইচ্ছামতাে প্রশ্ন করতে পারাে, উলটাপালটা, আবােলতাবােল, যেমন খুশি তেমন।
ভাইয়ার জ্বলজ্বলে চোখ দুটো দেখেই ওদের মনে হচ্ছিল, আমাদের কোনাে ভয় নেই, আমরা যা খুশি জিজ্ঞেস করতে পারি!’ ওদের প্রথম প্রশ্নগুলােতে যােগ-বিয়ােগ, গুণ-ভাগের কোনাে ব্যাপারই ছিল না।
প্রথম প্রশ্ন করল বান্টি। বাকিরা ভয় না পেলেও একটু আড়ষ্ট বােধ করছিল। বান্টি ওদের ক্লাসের সবচেয়ে দুষ্টু প্রকৃতির ছেলেগুলাের একজন, ভয়ডর বলে কিছু নাই। ও একটা ফিচলে হাসি মুখে নিয়ে জিজ্ঞেস করল, এনে এটা
অঙ্ক ভাইয়া, যদি 21=Twenty one,
11-Onety one, 12-Onety two 22=twenty two 59, 01961 নয় কেন?
11=Onety one, 12=twnetytwo হলাে না কেন?
তন্বী একটু খেপে গেল প্রশ্ন শুনে, এটা কেমন প্রশ্ন? আমরা ভাইয়ার সময় নষ্ট না করে ভালাে কোনাে প্রশ্ন করি।’ ক্লাসের সব রকম অকাজের হােতা, দুষ্টের শিরােমণি বান্টি অন্য সময় হলে কঠিন কোনাে জবাব দিয়ে দিত, কিন্তু এখন ও একটু দমে গেল, অঙ্ক ভাইয়ার সামনে এখনই নিজের ওই রূপটা সে দেখাতে চায় না!
তূর্য ভাইয়াই বরং তন্বীকে থামিয়ে দিল। সে হেসে বান্টির পক্ষ নিয়ে বলল, ‘প্রশ্নের ভালাে খারাপ নিয়ে ভেব না, প্রশ্ন করাটাই বেশি জরুরি।
কৌতূহল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার! কখনােই কোনাে বন্ধুকে প্রশ্ন করার সময় থামাবে না। এমনকি কোনাে শিক্ষকও যদি তােমায় থামিয়ে দিতে চায়, ধরে নেবে সে নিজেই হয়তাে ভালাে করে ব্যাপারটা জানে না। এমন হলে অন্য কোনােভাবে জানার চেষ্টা করবে, তাই বলে প্রশ্নটা কখনােই মেরে ফেলবে না! এবারে তােমার প্রশ্নে আসি।
কেন onety one, onety two হয় না, এটাই তাে তােমার প্রশ্ন? বান্টি হা-সূচক মাথা ঝাঁকাল। জানার আগ্রহ থেকে না, ও আসলে মজা করার জন্যই প্রশ্নটা করেছিল। কিন্তু ভাইয়া এত দারুণভাবে বিষয়টা নিয়েছেন, ওরও খুব আগ্রহ হচ্ছে ভাইয়া কী বলে সেটা শুনতে।
তূর্য ভাইয়া বলল, এই প্রশ্নটা আমার জন্য একটু কঠিন। এখানে গণিত যতখানি তার থেকে বেশি হলাে শব্দের ব্যুৎপত্তি (etymology)।
ইংরেজি শব্দগুলাের উৎপত্তি কীভাবে হলাে সেটা নিয়ে একটা দারুণ ওয়েবসাইট আছে- Online Etymology Dictionary; সেটার ওপর ভিত্তি করেই উত্তর দিচ্ছি—
আমরা যখন লিখি twenty, সেখানে twen অংশটা এসেছে প্রাচীন ইংরেজি থেকে, যেখানে এর মানে ছিল দুই। আর ty এসেছে tig থেকে, যার মানে ছিল ‘Groups of ten’।
অর্থাৎ twenty মানে হলাে— এখানে ‘দশ এর দল’ আছে দুইটি। একইভাবে এসেছে Thirty, forty এগুলাে।
যখন একাধিক ‘দশ এর দল’ থাকে তখন প্রাচীন ইংরেজরা এমন করে বলত। এখন দেখাে, যদি একটাই মাত্র দশ থাকে, তখন আর কতগুলাে ‘দশ এর দল’ আছে সেটা ভেবে লাভ কী?
একটা দশ এর দল বা ‘onety’ না বলে তারা শুধু বলত ‘দশ’ বা ‘ten’। এভাবে চিন্তা করতে পারে, আগে তাে ‘দ কী জিনিস সেটা বলতে হবে, তারপর ‘দশ এর দল।
ten-এর পরে eleven এসেছে elleovene শব্দটা থেকে, যার মানে ছিল ‘one left’ বা একটা অতিরিক্ত। এই শব্দটা যখন তৈরি তত দিনে গণনায় ১০ ভিত্তিক সংখ্যা প্রায় প্রতিষ্ঠিত।
ধরে নেওয়া যায়, ব্যাপারটা এমন— কেউ হয়তাে গুনছিল। ১০টা গােনার পরে দেখল আরও একটা অতিরিক্ত পড়ে আছে। এই হলাে eleven- এগারাে।
একইভাবে twelve এসেছে twelf থেকে, যার মানে ‘two left’ বা দুইটা অতিরিক্ত। এরপর thirteen, fourteen.. এগুলােতে—teen এসেছে ‘tiene থেকে যার মানে হলাে ‘ten more than’. Thirteen মানে হলাে ‘ten more than three’ বা ‘তিনের থেকে আর দশ বেশি!
একটু উল্টো শােনাচ্ছে, না? ‘দশের থেকে আর তিন বেশি হলে বেশি সুন্দর লাগত। কী করা যাবে যেভাবে এসেছে, সেভাবেই জানালাম তােমাকে।
তাই আর দেরী না করে অঙ্ক ভাইয়া pdf download / onko vaiya pdf download বইটি ডাউনলোড করতে নিচের ডাউনলোড বাটন এ ক্লিক করুন।
onko vaiya pdf / অঙ্ক ভাইয়া pdf বইটির হার্ড কফি ক্রয় করুন।
Rokomari.com | Adarsha.com.bd | Priyoshop.com | boibazar.com |
onko vaiya pdf download / অঙ্ক ভাইয়া pdf বইয়ের রিভিউ দিতে (ক্লিক_করুন)
সবগুলো বই পেতে (ক্লিক_করুন)