বই : অসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf download
লেখক : শেখ মুজিবুর রহমান
প্রকাশনী : ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড
রিভিউ : প্রসূন মাহবুব …………………………….
▪ কারাগারের রোজনামচা বইটি ডাউনলোড করুন।
শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf book কেবলমাত্র আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ নয়, এটির বহুমাত্রিক আবেদন রয়েছে।বইটি ১৯৩৮ সাল থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত উপমহাদেশের রাজনীতির অনবদ্য এক দলিল।
একজন সাধারণ মানুষ থেকে পূর্ব বাংলার মুক্তিকামী মানুষের আলোর দিশারী হয়ে উঠার গল্পে ভরপুর এই বইয়ের প্রতিটি পাতায় পাতায়। আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf book বইটি পড়ে একজন পাঠক সহজেই বুঝতে পারবে যে, তাঁর শেখ মুজিব থেকে বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠার উপাদান সমূহ।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf book / বইটিতে শেখ মুজিব হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কথা বারবার লিখছেন। সোহরাওয়ার্দীকে তাঁর রাজনৈতিক গুরু হিসেবে বইয়ে উল্লেখ করেছেন। সোহরাওয়ার্দীর স্নেহ,ভালবাসা,নেতৃত্বে তিনি বড় হয়েছেন এবং কাজ করতে শিখেছেন তা খুব অনবদ্যভাবে লিখেছেন শেখ মুজিবুর রহমান।
শেখ মুজিবের দীর্ঘ সময় তাঁকে জেলে জীবন কাটাতে হয়েছে। এই বইটিও তিনি জেলে বসেই লিখেছেন। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাষানীর কথাও বইয়ে উল্লেখ আছে। তিনি ভাষানীকে খুব শ্রদ্ধা করতেন।
১৯৫৪ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গ, আওয়ামী লীগ গঠন, যুক্তফ্রন্ট গঠন, নির্বাচনের ফলাফল ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খুব চমৎকার ভাবে বর্ননা করেছেন।
© প্রসূন মাহবুব
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জবি রোভার স্কাউট গ্রুপ কর্তৃক বুক রিভিউ প্রতিযোগিতা-২০২০
বইয়ের নামঃ ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ pdf book
বইয়ের লেখকঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
রিভিউঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” বইটি যে কেবলমাত্র একটি আত্মজীবনীমূলক বই তা নয়, বইটিতে ফুটে উঠেছে বঙ্গবন্ধুর উচ্চ মানের সাহিত্য প্রতিভা।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf book বইটিতে প্রকাশ পেয়েছে ১৯৩৪-১৯৫৫ সাল পর্যন্ত ঘটে যাওয়া উপমহাদেশের কিছু অনবদ্য রাজনৈতিক কার্যকালাপ। যা অন্যান্য আত্মজীবনী মুলক গ্রন্থ থেকে বেশ ব্যতীক্রমও বটে।
১৯৬৭ সালে আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf download free book বইটি রচিত হলেও,২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা চারটি খাতা জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় খুঁজে পায়,যা ছিলো মূলত ১৯৬৭ সালে কারাবন্দী থাকাকালীন বঙ্গবন্ধুর লিখে রাখা বাঙালির ইতিহাসের কিছু অকট্য দলিল। যা ২০১২ সালে “অসমাপ্ত আত্মজীবনী” নামক গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশ করা হয়।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী book বইটির শুরুটি অন্যান্য উপন্যাসের মতো হলেও সময়ের পালাক্রমে তা রুপ নিয়েছে একজন সামান্য বালক কিভাবে একজন অবিসংবাদিক রাজনৈতিক কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন তার হাজারো কারণ।
যেখানে একজন বালক তার নৈপূর্ণ্য কাজ ধারা জয় করে নিয়েছিলেন হাজারো অসহায় নিপীড়িত বাঙালির হৃদয়।বইটি যদিও বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লিখা আত্মজীবনী কিন্তু এ বইয়ের আসল নায়ক ছিলেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী।
১৯৩৬ সালে বঙ্গবন্ধু সুভাষ বসুর ভক্ত হয়ে রাজনীতিতে পা রাখলেও রাজনীতিতে সক্রিয় ভাবে প্রবেশ করেন শহিদ সোহরাওয়ার্দীর হাত ধরে। তাই, তাঁকেই লেখক সবসময় আদর্শ হিসেবে রেখেছেন।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf বইটিতে রয়েছে লেখকের কারাজীবনের পাশাপাশি তাঁর পিতামাতা, সন্তান-সন্ততি ও সহধর্মিণীর কথা,যিনি তাঁর সকল দুঃসময়ে শক্তি হিসেবে প্রেরণা দিয়েছেন।
আরো রয়েছে ১৯৫৪ সালের নির্বাচন,আওয়ামীলীগ গঠন,যুক্তফ্রন্টের গঠন, সাম্প্রদায়িকতা, হিন্দু-মুসলিম বিরোধ, কোটারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, আদমজী জুট মিলের ষড়যন্ত্র মূলক দাঙ্গা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তিনি বর্ণনা করেছেন খুবই চমৎকার ভাবে।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর কন্যার লেখা ভুমিকা এবং বইয়ের বিভিন্ন অংশে শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে লেখা টুকরো ছবিগুলো বইটিতে বিশেষ মাত্রা যোগ করেছে।
তরুণ সমাজ হয়তো হারিয়ে যাওয়া বঙ্গবন্ধুকে দেখেনি কিন্তু এই অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি আমাদের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর একাগ্রতা,একমুখীতা,স্থির লক্ষ্যের ব্যক্তি মুজিবকে দেখার এক দৃষ্টান্ত করে দেয়।যা একজন নবীন পাঠকের সাহিত্য তৃষ্ণা মেটাতে সক্ষম।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী রিভিউ লেখকঃ
আয়েশা আক্তার আশা।
ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সহচর, জবি রোভার স্কাউটস গ্রুপ।
★বই রিভিউ★ নামঃ অসমাপ্ত আত্মজীবনী
লেখকঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
ছোটরা যেমন রুদ্ধশ্বাসে এডভেঞ্চার বা গোয়েন্দা গল্প পড়ে, আমিও তেমনি এই বইটা পড়েছি। আমি মনে করি এই বইটি আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল।যারা দেশকে ভালোবাসে তাদের এই বইটি পড়তে হবে।
যারা দেশের ইতিহাস জানতে চায় তাদের পড়তে হবে। যারা রাজনীতি করে বা করতে চায় তাদের সবাইকে পড়তে হবে। যারা দেশ শাসন করে বা করতে চায় তাদের সবাইকে এই আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf বই পড়তে হবে।
শুধুমাত্র এই আসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি পড়লেই বুঝা যায় যে একজন মানুষ কিভাবে একটা জাতি হয়ে উঠে আর একটা জাতি কিভাবে একটা দেশ হয়ে উঠে। এই বই পড়ে আমি বুঝতে পেরেছি যে আমরা খুবই সৌভাগ্যবান।
যদি সেই সময় বঙ্গবন্ধুর মতো একজনের জন্ম না হতো তাহলে আজকে আমাদের অবস্থা কি হতো তা খুব সহজেই অনুমান করা যায়।
দেশের ও দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ তিনি করেছেন। নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু উপাধি পেয়েই থেমে যাননি, হয়েছেন জাতির পিতা। এই বই নিয়ে যত বলব ততই কম পড়বে। সবাইকে পড়ার অনুরোধ রইল।
#ভালোবাসি_পড়তে
✔বুক রিভিউ #১
নাম: অসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf download
লেখক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
২০০৪ সালের ঘটনা, শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট।
মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি।
জেল-জুলুম, নিগ্রহ-নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে।
বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে। আছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন।
একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে। সাথে রাজনৈতিক দর্শন এবং অভিজ্ঞতা ও ঘটনা তিনি ভালো ভাবে তুলে ধরেছেন এই বইটিতে।
বইয়ের প্রথম কিছ অংশ:- ✔
শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা ২০০৪ সালে আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানাে, পাতাগুলি জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট।
মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি।
জেল-জুলুম, নিগ্রহ-নিপীড়ন যাকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসরগীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা,
যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে।
আছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণীর কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন।
একইসঙ্গে আসমাপ্ত আত্মজীবনী লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্ৰমণের বর্ণনাও আসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf বইয়ের ভূমিকা
আমার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জীবনের সব থেকে মূল্যবান সময়গুলাে কারাবন্দি হিসেবেই কাটাতে হয়েছে। জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়েই তাঁর জীবনে বারবার এই দুঃসহ নিঃসঙ্গ কারাজীবন নেমে আসে।
তবে তিনি কখনও আপােস করেন নাই। ফাঁসির দড়িকেও ভয় করেন নাই। তাঁর জীবনে জনগণই ছিল অন্তঃপ্রাণ। মানুষের দুঃখে তাঁর মন কাঁদত। বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাবেন, সােনার বাংলা গড়বেনএটাই ছিল তাঁর জীবনের একমাত্র ব্রত।
অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যএই মৌলিক অধিকারগুলাে পূরণের মাধ্যমে মানুষ উন্নত জীবন পাবে, দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে মুক্তি পাবে, সেই চিন্তাই ছিল প্রতিনিয়ত তাঁর মনে।
যে কারণে তিনি নিজের জীবনের সব সুখ আরাম আয়েশ ত্যাগ করে জনগণের দাবি আদায়ের জন্য এক আদর্শবাদী ও আত্মত্যাগী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন, বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন স্বাধীনতা।
বাঙালি জাতিকে বীর হিসেবে বিশ্বে দিয়েছেন অনন্য মর্যাদা, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামে বিশ্বে এক রাষ্ট্র সৃষ্টি করেছেন। বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন সফল করেছেন।
বাংলার মানুষের মুক্তির এই মহানায়ক স্বাধীনতা সংগ্রাম শেষে যখন জাতীয় পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন নিশ্চিত করছিলেন তখনই ঘাতকের নির্মম বুলেট তাঁকে জনগণের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে। স্বাধীন বাংলার সবুজ ঘাস তাঁর রক্তে রঞঙ্জিত হয়েছে। বাঙালি জাতির ললাটে চিরদিনের জন্য কলঙ্কের টিকা এঁকে দিয়েছে খুনিরা।
এই মহান নেতা নিজের হাতে স্মৃতিকথা লিখে গেছেন যা তার মহাপ্রয়াণের উনত্রিশ বছর পর হাতে পেয়েছি। সে লেখা তাঁর ছােটবেলা থেকে বড় হওয়া, পরিবারের কথা, ছাত্র জীবনের আন্দোলন, সংগ্রামসহ তার জীবনের অনেক অজানা ঘটনা জানার সুযােগ এনে দেবে।
তাঁর বিশাল রাজনৈতিক জীবনের এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা এই গ্রন্থে তাঁর লেখনীর ভাষায় আমরা পাই। তিনি যা দেখেছেন, উপলব্ধি করেছেন এবং রাজনৈতিকভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন সবই সরল সহজ ভাষায় প্রকাশ করেছেন। তাঁর এই সংগ্রাম, অধ্যাবসায় ও আত্মত্যাগের মহিমা থেকে যে সত্য জানা যাবে তা আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণি অসমাপ্ত আত্মজীবনী করবে।
ইতিহাস বিকৃতির কবলে পড়ে যারা বিভ্রান্ত হয়েছেন তাদের সত্য ইতিহাস জানার সুযােগ করে দেবে। গবেষক ও ইতিহাসবিদদের কাছে এ গ্রন্থ মূল্যবান তথ্য ও সত্য তুলে ধরবে।
এই আসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি আমার পিতার নিজ হাতে লেখা। খাতাগুলাে প্রাপ্তির পিছনে রয়েছে এক লম্বা ইতিহাস। এই বইটা যে শেষ পর্যন্ত ছাপাতে পারব, আপনাদের হাতে তুলে দিতে পারব সে আশা একদম ছেড়েই দিয়েছিলাম।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে স্বাধীনতার ঘােষণা দেয়ার পরপরই আমাদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে (পুরাতন), (বর্তমান সড়ক নম্বর ১১, বাড়ি নম্বর ১০) পাকিস্তানী সেনাবাহিনী হানা দেয় এবং আমার পিতাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
তাঁকে গ্রেফতারের পর আমার মা ছােট দুই ভাই রাসেল ও জামালকে নিয়ে পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর আবার ২৬শে মার্চ রাতে পুনরায় সেনারা হানা দেয় এবং সমগ্র বাড়ি লুটপাট করে, ভাঙচুর করে। বাড়িটা ওদের দখলেই থাকে।
এই বাড়িতে আব্বার শােবার ঘরের সাথে একটা ড্রেসিংরুম রয়েছে, সেখানে একটা আলমারির উপরে এক কোণে খাতাগুলাে আমার মা যত্ন করে রেখেছিলেন। যেহেতু পুরনাে মলাটের অনেকগুলাে খাতা, যার মধ্যে এই আত্মজীবনী ছাড়াও স্মৃতিকথা, ডায়েরি, ভ্রমণ কাহিনী এবং আমার মায়ের হিসাব লেখার খাতাও ছিল, সে কারণে ওদের কাছে আর এগুলাে লুট পাট করার মত মূল্যবান মনে হয়নি।
তারা সেগুলাে ওভাবে ফেলে রেখে যায়, খাতাগুলাে আমরা অক্ষত অবস্থায় পাই। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িতে পরিবারের সকলকে হত্যার পর তৎকালীন সরকার বাড়িটা বন্ধ করে রেখেছিল।
১৯৮১ সালের ১৭ মে আমি প্রবাস।থেকে দেশে ফিরে আসি। তখনও বাড়িটা জিয়া সরকার সিল করে রেখেছিল। আমাকে ঐ বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয় নাই। এরপর ওই বছরের ১২ জুন সাত্তার সরকার আমাদের কাছে বাড়িটা হস্তান্তর করে।
তখন আক্বার লেখা স্মৃতিকথা, ডায়েরি ও চীন ভ্রমণের খাতাগুলাে পাই। আত্মজীবনী লেখা খাতাগুলাে পাইনি। কিছু টাইপ করা কাগজ পাই যা উইপােকা খেয়ে ফেলেছে। ফুলস্কেপ পেপারের অর্ধেক অংশই নেই শুধু উপরের অংশ আছে।
এসব অংশ পড়ে বােঝা যাচ্ছিল যে, এটি আব্বার আত্মজীবনীর পাণ্ডুলিপি, কিন্তু যেহেতু অর্ধেকটা নাই সেহেতু কোন কাজেই আসবে না। এরপর অনেক খোজ করেছি।
মূল খাতা কোথায় কার কাছে আছে জানার চেষ্টা করেছি। কিন্তু কোন লাভ হয় নাই। এক পর্যায়ে এগুলাের আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম।
ইতােমধ্যে ২০০০ সাল থেকে আমরা বঙ্গবন্ধুর লেখা স্মৃতিকথা, নয়াচীন ভ্রমণ ও ডায়েরি প্রকাশের প্রস্তুতি গ্রহণ করি। আমেরিকার জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এনায়েতুর রহিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন বঙ্গবন্ধুর উপর গবেষণা করতে।
বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাএই বিষয়টা ছিল তাঁর গবেষণার বিষয়বস্তু। তিনি মাহাবুবউল্লাহ-জেবুন্নেছা ট্রাস্ট কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
শেখ মুজিবুর রহমান এর কিছু তথ্য
শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ. ডিগ্রি লাভ করেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে অধ্যয়ন করেন। ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম।
তিনি তাঁর দল আওয়ামী লীগকে ১৯৭০ সালের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে নিরন্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী করেন। তাঁর এই অর্জন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের অন্যতম প্রেক্ষাপট রচনা করে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তিনি এক ঐতিহাসিক ভাষণে অসহযােগ আন্দোালনের ডাক দিয়ে ঘােষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ।”
ঐ সংগ্রামের জন্য তিনি জনগণকে “যা কিছু আছে। তাই নিয়ে” প্রস্তুত থাকতে বলেন। তিনি ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘােষণা দেন ও পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। নির্বাচিত গণপ্রতিনিধিরা ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠন করেন।
তাঁরা স্বাধীনতার ঘােষণাপত্র জারি করেন এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন হলে শেখ মুজিব পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১০ জানুয়ারি বীরের বেশে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন। বাঙালির অবিসম্বাদিত নেতা হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান জীবদ্দশায় কিংবদন্তী হয়ে ওঠেন।
১৯৭২ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও ১৯৭৫ সালে রাষ্ট্রপতির আসনে অধিষ্ঠিত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনাবাহিনীর কতিপয় উচ্চাভিলাষী সদস্যের হাতে তিনি নিহত হন।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf download বইটির পিডিএফ ডাউনলোড করুন।
আসমাপ্ত আত্মজীবনী pdf download বইটির হার্ড কফি ক্রয় করুন।