Youtube everything / ইউটিউব এভরিথিং pdf download
নামঃ- ইউটিউব এভরিথিং pdf download
লেখক:- মোস্তাফিজুর রহমান।
ইউটিউব এভরিথিং pdf বইয়ের প্রথম কিছু অংশ:-
মুখবন্ধ:-
বিশ্বায়নের এই যুগে ক্যারিয়ার কেবল চাকরি কিংবা ব্যবসায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ফ্রিল্যান্সিংয়ের পাশাপাশি ইউটিউবকেও এখন অনেকেই উপার্জনের উৎস হিসেবে বেছে নিচ্ছে। উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও অনেক ইউটিউব চ্যানেলের মালিক কেবল ইউটিউব থেকে উপার্জন করেই জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সেইসাথে অনেকেই খুব অল্প সময়ে হয়ে যাচ্ছেন ইউটিউব তারকাও। আর তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইউটিউবের প্রতি আগ্রহটা তীব্র আকার ধারণ করেছে। অন্যদের সফলতার গল্প শুনে অনেকেই উৎসাহ নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খােলেন এবং ভিডিও বানাতে শুরু করেন। কিন্তু বেশিরভাগ সময় সঠিক গাইডলাইন এবং দক্ষতার অভাবে তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন।
আমি নিজেও যখন প্রথম ইউটিউবে যাত্রা শুরু করি তখন নানা সমস্যার সম্মুখীন হতাম এবং কারাে সহযােগিতা না পেয়ে নিজেই তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করতাম। তখন বাংলাদেশে ইউটিউব বিষয়ে গাইড করার মতাে তেমন কেউ ছিল না। কারও দিকনির্দেশনা পেলে হয়তাে আজ আমার চ্যানেল আরাে এগিয়ে থাকত।
তবে সময়ের সাথে সাথে এখন অনেকেই ইউটিউবে সফল হওয়ার পর নতুনদের সহযােগিতা করছে এবং দিকনির্দেশনা দিচ্ছে। আমি নিজেও সেই কাজটিই করি।
বাংলাদেশে গুটিকয়েক মানুষকে দেখেছি, যারা ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে কাজ করার বিষয়ে নিখুঁত এবং নির্ভুল দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন মােস্তাফিজুর রহমান তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর সাথে দীর্ঘদিন ধরে আমি ইউটিউব নিয়ে কাজ করেছি।
দুজন একসাথে অনেক আলােচনা এবং গবেষণা করেছি ইউটিউব চ্যানেল বিষয়ে। সেই অভিজ্ঞতা এবং গবেষণার একটি গঠনমূলক ব্যাখ্যা হল ইউটিউব এভরিথিং নামের এই বইটি। এমনই একটি বইয়ের অপেক্ষায় ছিলাম আমিও।
Youtube everything / ইউটিউব এভরিথিং pdf বইটিতে মােস্তাফিজুর রহমান ইউটিউবে সফল হওয়ার জন্য একজন বিগেনারের যা যা জানা উচিত তার প্রায় শতভাগ তুলে এনেছেন খুবই সাবলীল ভাষায়।
খুঁটিনাটি প্রতিটি বিষয়ের ওপর তাঁর বিশদ বিশ্লেষণ প্রত্যেকেরই বােধগম্য হবে বলে আমি মনে করি।
ইউটিউবে চ্যানেল খােলার পূর্বপরিকল্পনা থেকে শুরু করে চ্যানেল খােলার সময় এবং তারপরের প্রতিটি ধাপের ওপর সমান গুরুত্ব দেয়া হয়েছে বইটিতে। প্রতিটি বিষয় ক্রমান্বয়ে সাজানাে হয়েছে, ফলে সবাই জানতে পারবে কোন কাজটি আগে করতে হবে এবং কোনটি পরে।
সেইসাথে ইউটিউব থেকে আয় করার ভিন্ন ভিন্ন পথগুলােও দেখানাে হয়েছে।বইটির শেষের দিকে থাকা প্রশ্ন-উত্তরগুলাে অনেকেরই মুক্তি দেবে বিভ্রান্তি থেকে। আর কনটেন্ট আইডিয়া নতুন কনটেন্ট খুঁজে পেতে সহযােগিতা করবে।
সর্বোপরি, এই ইউটিউব এভরিথিং বইটি পড়ার পর পাঠক ইউটিউবে চ্যানেল খােলা এবং সেখান থেকে আয় করার বিষয়ে বিশদ জ্ঞান লাভ করতে পারবেন। পাশাপাশি, নতুনদের ইউটিউবে কাজ করার জন্য।
বিশেষ অনুপ্রেরণা হিসেবেও কাজ করবে ইউটিউব এভরিথিং বইটি। আর অভিজ্ঞদের জানার পরিধি আরাে সমৃদ্ধ করবে। আমি সবাইকে বইটির কোনাে অংশ বাদ না দিয়ে পুরােটা পড়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরােধ করব। তাহলে ইউটিউব নিয়ে আর কোনাে জটিল সমস্যায় পড়তে হবে না।
সােহাগ মিয়া
পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা
Sohag360, The Tech Doctor
ভূমিকা
বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউব। বিশ্বব্যাপী ৫০ মিলিয়ন কনটেন্ট ক্রিয়েটর প্রতি মিনিটে এখানে ৫০০ ঘণ্টার বেশি ভিডিও আপলােড করেন এবং ৩০ মিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন ১ বিলিয়ন ঘণ্টা ইউটিউব দেখেন।
এমনকি সারা পৃথিবীর ৮০ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ইউটিউব তথা গুগল একাউন্ট রয়েছে। ৮০টি ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় ইউটিউব দেখা এবং ব্যবহার করা যায়, যা ইন্টারনেট দুনিয়ার ৯৫ শতাংশ মানুষের বােধগম্যতার মধ্যে পড়ে। ✔
ইন্টারনেট জায়ান্ট গুগলের মালিকানাধীন এই প্লাটফর্মে কাজ করে বিশ্বব্যাপী ভাগ্য বদলেছে অসংখ্য মানুষের। নিজের দৈনন্দিন জীবন, আবেগ-অনুভূতি, বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিক্রিয়া এবং সৃজনশীলতা ভিডিও’র মাধ্যমে প্রদর্শন করে তারকা হয়ে উঠেছেন অনেকেই, আয় করছেন কোটি কোটি টাকা।
একটু দেরিতে হলেও একজন দু’জন করে আসতে আসতে এখন দলে দলে বাঙালিরা ভিড় করছেন এই প্লাটফর্মে। চেষ্টা করছেন দক্ষ ভিডিওচিত্র নির্মাণকারী হওয়ার। কেননা সকল শর্ত পূরণ করে সঠিক নিয়মে ইউটিউবে ভিডিও আপলােড করতে পারলেই আয় করা যাবে আমেরিকান ডলার! ঘরে বসেই হওয়া যাবে কোটিপতি।
এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে ইতােমধ্যে অসংখ্য বাঙালি-তরুণ সাফল্যের মুখ দেখেছেন। নিয়মিত ইউটিউবে কাজ করে অসংখ্য ইউটিউবার প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন। ইতােমধ্যে বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছেন অনেকেই।
এমনকি আমাদের ছােট পর্দা, তথা টেলিভিশন মিডিয়ায় সাম্প্রতিক অনেক তরুণ অভিনেতা-
অভিনেত্রীও উঠে এসেছেন ইউটিউব থেকে। ২৬ লাখ ৭৭ হাজার বেকারের বাংলাদেশে নিশ্চয়ই এই খবরটা অনেক আশা-জাগানিয়া!
সাম্প্রতিক সময়ে এন্ড্রয়েড ফোনের বিপ্লব এবং ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতাে বাংলাদেশেও ইউটিউব ব্যবহারকারীর সংখ্যা উল্লেখযােগ্য হারে বেড়েছে। বেড়েছে এই ক্ষেত্রে কাজ করতে আগ্রহী মানুষের সংখ্যাও।
এমনকি দেশের বিজ্ঞাপন বাজারের একটা বড় অংশ চলে গেছে ইউটিউবের দখলে। কেননা, শুরুতে শুধু ইন্টারনেট সেবাদানকারী কোম্পানিগুলাে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন করলেও এখন পত্রিকা, টেলিভিশন এবং বিলবাের্ডে বিজ্ঞাপন দেয়া নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলােও অনলাইনে বিজ্ঞাপন দেয়া শুরু করেছে।
কারণ, এখন সময়টাই ইন্টারনেটের দখলে। অদূর ভবিষ্যতে সকল প্রকার কোম্পানি এবং পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বিপণনের জন্য সিংহভাগ বিজ্ঞাপন ইন্টারনেটের মাধ্যমেই প্রচার করবে বলে আশা করা যায়। সুতরাং এই ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত আয়ের সম্ভাবনা বাড়ছে।
এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে অসংখ্য বেকার, তরুণ, গৃহিণীসহ নানান পেশার মানুষ ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করার চেষ্টা করছেন। হতে চাইছেন ইউটিউবার। কিন্তু তাঁদের সামনে সঠিক কোনাে দিকনির্দেশনা নেই। কিভাবে শুরু করবেন, কোথা থেকে শুরু করবেন, কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকবেন, কোন ভুলগুলাে এড়িয়ে চলবেন, অথবা কিভাবে কাজ করলে দ্রুত সাফল্য আসবে।
আবার ইউটিউবে দীর্ঘদিন ধরে ভিডিও আপলােড করছেন, কিন্তু সাফল্যের দেখা মেলেনি—এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়! তাদের ভুল কোথায়?
কাজে কী কী পরিবর্তন আনলে এবং কী কী দিকনির্দেশনা মেনে চললে অচিরেই সাফল্যের মুখ দেখা যাবে—এসব বিষয়ে তাদের কোনাে স্বচ্ছ ধারণা নেই।
কিছু বাঙালি-কনটেন্ট ক্রিয়েটর ইউটিউব-সম্পর্কিত টিউটোরিয়াল তৈরি করলেও সেগুলাে পর্যাপ্ত নয়। এমনকি সেখানে নেই কোনাে ধারাবাহিকতা, অর্থাৎ একটি টিউটোরিয়াল চ্যানেল ধারাবাহিকভাবে দেখলেই যে ইউটিউবের সব খুঁটিনাটি বিষয় শেখা যাবে এমন কোনাে নিশ্চয়তা নেই।
কেননা ইউটিউব-টিউটোরিয়াল নির্মাণকারীরাও বেশিসংখ্যক দর্শকের চাহিদা কী সেটা বিবেচনা করেই ভিডিও তৈরি করেন। যার ফলে নতুনদের অনেক প্রশ্নের উত্তরই সেখানে থাকে না, অথবা ধারাবাহিকভাবে প্রশিক্ষণ নেয়ারও কোনাে সুযােগ থাকে না।
আমার কাছে ইউটিউবের খুঁটিনাটি অনেক সমস্যা নিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য ফোন-কল ও মেসেজ আসে। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করি তাদের সঠিক পরামর্শ দেয়ার। কিন্তু এভাবে একজন, একজন করে।
ইউটিউব এভরিথিং
কতজনকেই-বা শেখানাে যায়, কতজনকেই-বা তথ্য দেয়া যায়? নতুন ইউটিউবারদের খুঁটিনাটি এমন নানান প্রশ্নের উত্তর এবং পরামর্শ দিতে গিয়ে আমার মনে হল, যদি ইউটিউব সম্পর্কিত সবগুলাে বিষয় একত্রিত করে ধারাবাহিকভাবে সাজিয়ে একটি বই লিখে ফেলা যায়, তাহলে একসাথে, এক মলাটে একজন ইউটিউবারের হাতে সব বিষয়ের সমাধান তুলে দেয়া যাবে।
একটু সময় নিয়ে সম্পূর্ণ বইটা পড়ে ফেললেই ইউটিউব সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য তার জানা হয়ে যাবে। সে সকল সমস্যা ও সম্ভাবনা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হয়েই কাজ শুরু করতে পারবে। ফলে হঠাৎ করে চ্যানেল সাসপেন্ড হওয়া বা অনাকাক্ষিত সকল বিষয় এড়িয়ে দ্রুত সাফল্য বয়ে আনতে পারবে।
এই ভাবনা থেকেই ইউটিউব এভরিথিং-এর জন্ম। আমার বিশ্বাস, এই ইউটিউব এভরিথিং বইটি পড়ার পর ইউটিউব-সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয় সম্বন্ধে পাঠক স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ ধারণা পাবে, যা ব্যবহার করে যে কেউ অনায়াসে ইউটিউবে সাফল্য বয়ে আনতে পারবে।
মােস্তাফিজুর রহমান
ডিসেম্বর, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ
mustafizauthor@gmail.com